Saturday, October 28, 2017

বিসিএস প্রিপারেশন, কি পড়বো আর কি পড়বোনা

সবাই তো জীবিকার পিছনে ছুটে, জীবনের পিছনে ছুটে কয়জন?” খুব পছন্দের একটি উক্তি। জীবনের জন্য জীবিকা, জীবিকার জন্য জীবন নয়, কিন্তু জীবিকার অন্বেষণে যদি জীবনটাই অনিশ্চিত হয়ে যায়? অথবা যে জীবিকার জন্য এত পরিশ্রম তা যদি পরিবারের আপনজনদের নিয়ে ব্যয় করতে নাই পারলেন, তাহলে সেই জীবিকার মূল্য কতখানি? তাহলে কোন চাকুরীতে আপনি জীবন ও জীবিকা এক সাথে পাবেন?
তবু জীবনের জন্য মাঝে মাঝে থামতে হয়।
কিন্তু এই দুর্মূল্যের বাজারে চাকুরী অনিশ্চিত, নেই কোন নির্দিষ্ট কর্ম ঘণ্টা, নেই কোন ফুরসত। অন্য প্রান্তে সম্মনা, নিশ্চিত চাকুরী ও ভবিষ্যৎ এর পাশাপাশি নানাবিধ সুবিধা (লিয়েন, প্রেষণ, শিক্ষা ছুটি) সিভিল সার্ভিস এর চাকুরী সমূহকে আরাধ্য করে তুলেছে।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস বা বি সি এস এ মোট ২৭টি ক্যাডার এ বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্য থেকে জনবল নিয়োগ করা হয়। বি সি এস এর মাধ্যমে প্রথম শ্রেণীর গেজেটভুক্ত কর্মকর্তা নিয়োগপ্রাপ্ত হন। প্রজাতন্ত্রের এই কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রদানের কাজটি করে পাবলিক সার্ভিস কমিশন। ব্রিটিশ পাবলিক সার্ভিস, পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস এর পরিনত রূপ হচ্ছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস। নিঃসন্দেহে সর্বোচ্চ সম্মানের এই চাকুরী। কিন্তু প্রতিযোগিতা অন্য যেকোনো চাকুরীর তুলনায় অনেক বেশি, তাই পরিশ্রম, ধৈর্য এবং একাগ্রতা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সর্বত্র অপরিহার্য।
বিসিএস এ প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক এই তিন ধাপে নিরীক্ষণ ও মূল্যায়ন হয়। বিসিএস এর যেকোনো ব্যাচ এর বিজ্ঞপ্তি থেকে নিয়োগ পর্যন্ত কম বেশি ২ বছর লেগে যায়, তাই পুরো সময়টাতে যথেষ্ট মানসিক শক্তি না থাকলে, ভেঙ্গে পরার সম্ভাবনা থাকে। নিজেকে সাপোর্ট দিতে হবে নিজেকেই, বিসিএস এর জন্য আপনার একাগ্রতা, একান্ত ইচ্ছাই পারে আপনাকে এগিয়ে নিতে। তাই বিসিএস এর জন্য চেষ্টা করার আগে জেনে নিন, এই পেশা কেন আপনি বেছে নিতে চাচ্ছেন।
সম্প্রতি বেতন ভাতা বৃদ্ধির কারণে সরকারী চাকুরীর বেতন অনেক বেসরকারি চাকুরীর চেয়ে বেশি। কিন্তু সামগ্রিক বেতন কাঠামোর জন্য সরকারী চাকুরী উপযুক্ত উপায় না, শুরুতে ভাল বেতন হলেও বৃদ্ধির হার কম এবং সরকারী চাকুরীতে আপনার বেতন সব সময় অপুষ্টিতে ভুগবে। কিন্তু পেনশন, প্রভিডেন্ট ফান্ড এর সুবিধা আছে। আছে চাকুরীর নিরাপত্তা। অনেকে সম্মানের কথা ভাবতে পারেন, নিঃসন্দেহে বিসিএস কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ সম্মান পেয়ে থাকেন। সবচেয়ে বড় বিষয়- দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ পাওয়া। সরকারের নীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের, জনগনের কল্যাণে সরাসরি ভূমিকা রাখা। আর সবচেয়ে ভাল সুযোগটি পেতে সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করতে, সবচেয়ে বেশি সময় দিতে অবশ্যই আপনি রাজি হবেন।
যেকোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরে পরীক্ষার সম্ভাব্য সময় সেপ্টেম্বর মাসে। পরীক্ষার আগে ৩ মাস সময় হাতে নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহন করুন প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য। অনেকে বার বার প্রিলি দেন প্রস্তুতি ছাড়া, চান্স নিয়ে দেখেন, যদি লেগে যায়, তাহলে লিখিততে প্রস্তুতি নিবেন এই চিন্তা করে। কিন্তু বিসিএস এর প্রিলি উৎরানো লিখিত বা মৌখিক এর চেয়েও বেশি কঠিন। মনে রাখবেন-“প্রস্তুতি ছাড়া প্রিলি উৎরানো সম্ভব না”, নতুন ২০০নম্বর এর পদ্ধতিতে প্রস্তুতি নিতে হবে সব বিষয়ে। প্রস্তুতি ছাড়া প্রিলি দেয়ার পরে প্রিলি না হওয়া মানে পুরো এক বছর পিছিয়ে যাওয়া।
বাংলা সাহিত্যে প্রাচীন যুগ, মধ্য যুগ এবং বিশেষভাবে আধুনিক যুগ পরতে হবে। সন্ধি, শব্দ, উপসর্গ, কারক, সমাস, অব্যয়, প্রত্যয় গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রস্তুতিটি লিখিত পরীক্ষাতেও কাজে লাগবে। চর্যাপদ, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, মঙ্গলকাব্য, রামায়ন, মহাভারত, আরাকান রাজসভা, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত উপন্যাস, গল্প, নাটক ইত্যাদি। উপাধি, ছদ্মনাম, উক্তি পড়তে হবে।
ইংরেজি সাহিত্যে এলিজাবেথ, ভিক্টোরিয়ান এবং রোমান্টিক এজ এর কবিদের সম্পর্কে পরলেই চলবে। কোন উক্তি কথা হতে উদ্ধৃত তা জানতে হবে, জানতে হবে কার উপাধি কি। ক্লজ, সেন্টেন্স স্ট্রাকচার, ভয়েস, ইডিওমস পরবেন।
বাংলাদেশ বিষয়ে পরতে শুরু করতে হবে বাঙালি জাতির উদ্ভব থেকে, তারপর ইতিহাস এ মৌর্য, তাম্র, পাল, সেন, আফগান, মুঘল, ইসলামী শাসন, সুলতানি আমল, নবাবি, ব্রিটিশ, পাকিস্তানি আমল সব পরতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভালভাবে জানতে হবে। সংবিধান, ভূপ্রকৃতি, প্রশাসনিক কাঠামো, আকার আয়তন, প্রসিদ্ধ স্থান, নদীর গতি প্রকৃতি পরতে হবে। জানতে হবে আমাদের দেশে দুর্যোগ এর করনীয় এবং দুর্যোগ সম্পর্কিত ইতিহাস।
সুশাসন এর প্রশ্ন সমূহ কিছুটা সাধারন বিচক্ষণতা থেকেই উত্তর করা সম্ভব। তবু যেকোনো একটি বই থেকে দেখে নিতে পারেন। আন্তর্জাতিক এ দেখবেন বিভিন্ন সংস্থার প্রধান কার্যালয়, ইতিহাস, চুক্তি-বিভক্তি, যুদ্ধ, জলবায়ু সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সংস্থা, আইন, কনভেনশন, প্রোটোকল ইত্যাদি।
গনিত এর জন্য শতকরা, লাভ ক্ষতি, ঐকিক নিয়ম, বীজগণিতের রাশিমালা, মান নির্ণয়, সম্ভাব্যতা, বিন্যাস সমাবেশ, আয়তন, পরিসীমা সম্পর্কিত অথবা কোণের মান নির্ণয় ইত্যাদি সমস্যা সমাধান করতে হবে। মানসিক দক্ষতার ক্ষেত্রে সাধারণত ধারা, সমার্থক শব্দ, এমনকি বানান আসতে পারে। তবে গানিতিক সমস্যা আর মানসিক দক্ষতার ক্ষেত্রে যাতে যথা সম্ভব কম সময়ে উত্তর করা সম্ভব হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বিজ্ঞানে পদার্থ, রসায়ন এবং জীব বিজ্ঞান- সব শাখা থেকেই কিছু না কিছু আসে। বিভিন্ন পরিমাপ যন্ত্র, উদ্ভিদের বৃদ্ধি সম্পর্কিত তথ্য, শারীরবিদ্যা, মহাকর্ষ, জ্যোতির্বিদ্যা, আধুনিক বিজ্ঞান, বিভিন্ন রোগ ব্যাধি, বিখ্যাত আবিষ্কার ইত্যাদি। তথ্য প্রযুক্তিতে কম্পিউটার এবং মোবাইল এর ইতিহাস, বর্তমান অবস্থা, বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক, সফটওয়্যার, প্রোগ্রাম ভাষা, সামাজিক যোগাযোগ আবিষ্কারক ও সাল, বাংলাদেশ এর অবস্থা ইত্যাদি পড়া যেতে পারে।
প্রিলি এর জন্য যেকোনো একটি ডাইজেস্ট দিয়েই প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা যায়। তবে নিয়মিত পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কারেন্ট এফেয়ারস এর বিশেষ বিসিএস সংখ্যা, পূর্বের প্রশ্ন ইত্যাদি আপনাকে প্রকৃত চিত্র না দিলেও প্রচ্ছন্ন ধারণা অন্তত দিতে পারবে। নোট করে পড়ার প্রয়োজন নেই, তবে মনে রাখার জন্য শর্ট টেকনিক, টোটকা এসব যেখানে পাওয়া যাবে শিখে নেয়া ভাল। প্রিলিতে আপনাকে এক গাদা তথ্য নিয়ে পরীক্ষার হল এ যেতে হবে। বারবার অনুশীলন করলে আপনি কোথায় কোন তথ্য তা মন রাখতে পারবেন।
 নিজের যে চাকুরীর প্রতি প্রবল ইচ্ছা আছে তা দিয়ে ক্যাডার পছন্দক্রম শুরু করুন। যদি আপনি বিসিএস এর মাধ্যমে শুধু একটি সরকারী চাকুরী খুঁজছেন এমন হয় তাহলে পছন্দক্রম অনুসারে সব গুলো ক্যাডার পছন্দের তালিকাতে দিন, নতুবা শুধুমাত্র পছন্দের ক্যাডার সমূহ তালিকাতে সংযোজন করুন। যে ক্যাডার এর প্রতি আপনার আগ্রহ নেই তা পছন্দের তালিকাতে দেয়ার যৌক্তিকতা নেই। এবং মনে রাখবেন আপনার প্রথম পছন্দ অনুযায়ী আপনাকে মৌখিক পরীক্ষাতে প্রশ্ন করা হবে। অতএব, আপনার সাধ এবং সামর্থ্য এর সম্মিলনে পছন্দের তালিকা তৈরি করুন।
প্রিলি এক্সাম এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সময় ব্যবস্থাপনা। অনেক সময় দেখা যায় যে, ভাল প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও অনেকে পরীক্ষার সময় সব প্রশ্নের উত্তর করে আসতে পারেন না, অনেকে জানা অনেক বিষয় পরীক্ষার চাপে ভুলে যান, ভুল করে বসেন,তাদের এইসব সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য পরীক্ষার আগেই বাসায় বসে পরীক্ষার আদলে মডেল টেস্ট দিতে হবে। বিভিন্ন সেলফ টেস্ট প্রশ্ন পাওয়া যায়, তা দিয়ে পরিক্ষা দিলে পরীক্ষা বিষয়ে জড়তা কেটে যাবে, খুঁটিনাটি ভুলগুলোর সম্ভাবনা কমে যাবে।

Wednesday, October 25, 2017

বিসিএস(BCS) কি আপনার হতেই হবে?

লেখক: ই্রবাহীম খলিল মুহিম
এলএলবি(সম্মান), এলএলএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৩৬তম বিসিএস (প্রশাসন) [সুপারিশপ্রাপ্ত]
১০ম বিজেএস (সহকারী জজ/জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) সুপারিশপ্রাপ্ত।
বিসিএস প্রস্তুতিকালে আমার চিন্তাধারা ; আপনি ও ভাবতে পারেন এভাবে :
আপনি যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন যে বিসিএসটা আপনার হতে হবে । তবে আমার চিন্তাগুলো আপনার কাজে লাগতে পারে। যদি আপনি ভাবেন যে, বিসিএস আপনার জন্য হবে না। তবে অযথা নিচের কথা গুলো পড়ার দরকার নেই।
১. আপনার ব্যসিক নিয়ে ভাবুন :
প্রথমেই আপনাকে কিছু নেতিবাচক কথা বলে নি্ই্ ।
আপনি বিসিএস দিবেন ? টেন্স পারেন ? বাংলা ব্যাকরণ পড়লে কি নিজে নিজে বুঝতে পারেন ? সরল অংক নিজে নিজে বুঝে বুঝে করেন ? ডিকশনারি ইউজ করতে পারেন ? পৃথিবীর মানচিত্র নিয়ে ধারণা আছে ? পারিব না কবিতাটি কে লিখেছেন বলতে পারবেন ? ইংরেজিতে যেকোন টপিকে ৫ লাইন লিখতে পারেন ? ১০ টা ইংরেজি শব্দের ৬ টা কি পরিচিত মনে হয় ? ডায়বেটিক কেন হয় , জানেন ? রক্তের গ্রুপ কয়টি , জানেন ? কম্পিউটারের ভাষা কয়টি , জানেন ?
ক্লাস এইট – নাইন – টেন পর্যন্ত শুধুমাত্র বোর্ড বই দিয়ে অংক , ইংরেজি , বাংলা বা আরো সব বিষয়ের ক্লাশ নিতে পারবেন ?
– এরকম কিছু ব্যসিক প্রশ্নের উত্তর যদি – হ্যাঁ হয় তবে আপনি সামনে মুভ করুন। আপনার যদি ব্যসিকই না থাকে তবে আপনার সামনে মুভ করার দরকার নাই । অনার্স , মাস্টার্স শেষ করেছে অথচ – “আমি ২ দিন যাবৎ জ্বরে ভুগছি” এই বাক্যের সঠিক ট্রান্সেলেশন পারে না এমন অনেককেই আমি চিনি ।
অথচ রাতদিন তারে পড়ার টেবিলে দেখি ।
প্লিজ মাইন্ড করবেন না। পারলে এক্কবারে শিশু ওয়ান থেকে সব কিছু রিভিশন দিয়ে আসুন এবং দেখুন পারবেন কিনা । না পারলে বাদ দেন, বিসিএস আপনার জন্য নয়। আপনার জন্য আরো হাজারো বড় বড় কাজ অপেক্ষা করছে।
২, কোচিং করবেন ? নাকি করবেন না ?
প্রথমেই বলে রাখি আমি কোন কোচিং করি নি । সো কোন কোচিং ভালো কি মন্দ তা আমি বলতে পারব না । কোচিং এ যাতয়াতের সময়টাই ( মিনিমাম ২ ঘন্টা) ভালো করে পড়লে বিসিএস হয়ে যেতে পারে। আর আমি শুধুমাত্র আপনার ভেতরে একটা জেদ বা প্রত্যয় ঢুকানোর জন্য একথাগুলো লিখছি ।
৩. কি কি বই পড়বেন ?
আপনি যদি ভাবেন যে কোন কোন বই পড়বেন এবং কোন বইয়ের কোন পৃস্ঠার কোন লেখাটা পড়বেন সেটাও আমি বলে দিব তবে আপনি ভুল ভাবছেন । এইসব বিষয়ে আমাকে ইনবক্স করার ও দরকার নেই । কারণ কোন স্পেশিফিক বই পড়ে বিসিএস হয় বলে আমার মনে হয় না। সো দেখা গেল যে বইয়ের নাম আমি জীবনে শুনি ও নাই সে বই থেকেও বিসিএস এ একটা উল্ল্যেখযোগ্য প্রশ্ন আসতে পারে। আমার সামনে বিসিএস সংক্রান্ত যত বই এসছে আমি তা টাচ করার চেষ্টা করেছি ।
সো আমার কাছে কোন কোচিং বা বই এর নাম না জানতে চাইলেই খুশি হব।
যদি আপনি ভেবে থাকেন যে আপনার সময় নষ্ট হচ্ছে আমার পোস্ট পড়ে তবে আপনি বাকিটা না পড়েই স্কিপ করতে পারেন। তারপরেও যদি আমার কথা শুনতে চান তবে শুনুন –
বিসিএস প্রিপারেশন, কি পড়বো, আর কি পড়বোনা
৪. সংখ্যা নয় নিজেকে নিয়ে ভাবুন –
আমি কখনো সংখ্যা দিয়ে হিসাব করি না।বিসিএস এর জন্য কয়জন ফরম পূরণ করল এটা আমার জন্য একবারে অপ্রয়োজনীয় একটা তথ্য । বিসিএস এ ৩ লাখ প্রিলি দিল, নাকি ৫ লাখ পিলি দিল এই সংখ্যাটা আমি শুনতেও চাই না , মনে ও রাখি না। রিটেনে বা ভাইবাতে বা কয়জন এটেন্ড করল সেটা ও আমি মনে রাখি নি। আমার চিন্তা ছিল প্রশাসন ক্যাডারে ২০০ এর মত নিবে । সো আমাকে ওই ২০০ জনের মধ্যে থাকলেই চলবে।
যেহেতু বিসিএস এ এক্কেবারে প্রথম হওয়ার চিন্তা আমার ছিলো না , সুতরাং অতটা প্রেশার ও আমি নেই নি ।
আমি আপনাকে বলব, আপনিও এই সব বড় বড় সংখ্যা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আপনার টার্গেট ছোট সংখ্যাটা নিয়ে ভাবুন।
৫. বন্ধুহীন কয়মাস –
বিসিএস পরীক্ষার আগের কয়েকমাস বলতে গেলে আমি বন্ধুহীন ছিলাম । তবে ইন্টারনেটে পড়াশুনা করা, সিলেবাস দেখা, প্রয়েজিনীয় তথ্য খোঁজা বা মডেল টেস্ট দেওয়ার জন্য আমি এখানে সরব ছিলাম।
বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন ছাড়া কয় মাস আপনাকে একা একা সাধনা করার মানসিকতা অর্জন করতে হবে।
৬, ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবের ছুটিতে নিজেকে বঞ্চিত করা ।
আমি যতটি ধর্মীয় ঈদের ছুটি বাড়িতে কাটিয়েছি তার দ্বিগুন ঈদের ছুটি বা আমি কাটিয়েছি প্রায় একা একা ঢাকা শহরে। এই সময়টা আমার নিজের সাথে নিজের বোঝা পড়ার সময়। যদিও এই কয়দিনে মন তেমন ভালেঅ লাগে নি । তবু ও আমি এই কয়দিনে মনের শক্তি অর্জ ন করার জন্য মনের সাথে দিনরাত যুদ্ধ করেছি এবং ছুটিটাকে/ আনন্দটাকে উৎসর্গ করেছি বিসিএস ক্যাডার / বিজেএস এ সফল হবো এই প্রত্যয়ে। সামাজিক বিয়ে সাদীর অনুষ্ঠানে ও কম গিয়েছি । আপনি ও একটা ঈদের ছুটিতে ঢাকাতে থেকে দেখতে পারেন।
৭ . দানে দানে এক দান
আমাদের গ্রামে একটা কথা আছে – ”দানে দানে তিনদান” । অর্থাৎ – তিনবার চেষ্টা করার জন্য প্রথম থেকেই মনে মনে সিদ্ধান্ত নেওয়া । আমার কাছে এটা একটা চমৎকার ফালতু কথা। আমার কাছে দানে দানে তিনদান বলে কিছু নেই । আমার কাছে আছে – ”দানে দানে একদান”। আমার ইচ্ছাই ছিলো যে – একবার বিসিএস এবং বিজেএস দিব । হলে হবে না হলে নাই ।
আপনি ও চিন্তা করুন যে আগামী বিসিএসটাই আপনার জীবনের অন এন্ড অনলি আংশিক রঙিন, ফুল এন্ড ফাইনাল বিসিএস । এটাকেই আপনাকে অর্জন করতে হবে।
৮. প্রচুর মডেল টেস্ট দিন –
প্রতিদিন ১০ টি প্রশ্নের হলে ও মডেল টেস্ট দিন। ২০০ টা প্রশ্নের মডেল টেস্ট বাসায় বসে এক সিটিং এ দেওয়া অনেক কষ্টের । এজন্য আমি একটা ২০০ প্রশ্নের মডেল টেস্ট এক সপ্তাহ ধরে ও দিয়েছি। যখনই আর ভালো লাগতো না তখনই স্টপ করেছি । আপনি ও প্রতিদিন ১০ টা প্রশ্ন হলেও মডেল টেস্ট দিন এবং নিজেকে যাচাই করনি । এবং নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগীতায় নামুন । মডেল টেস্ট দেওয়ার সময় নেগেটিভ মার্কের বয় করবেন না্। সবগুলোই দাড়িয়ে দেখবেন কয়টা হয়েছে ? কত পেয়েছেন ? কতটুকু ইমপ্রুভ করা দরকার।
৯. রিটেনের বই কিনে ফেলুন ;
সময় থাকলে রিটেনের এক সেট বই কিনে ফেলুন । এবং মাঝে মাঝে পাতা উল্টান । মনের জোড় বাড়বে। কিছু কিছু টপিকের বিস্তারিত পড়ুন । এমন ও হতে পারে রিটেনের বইটাই আপনার প্রিলি এবং ভাইভার জন্য বেশি সহায়ক
১০ . Google is the Best master –
কিছুদিন আগেও আমরা বলতাম – Book is the Best master But now a days it is the second master and It is the Google who s the best master.
So google কে use করা শিখুন । ম্যাক্সিমাম প্রয়োজনে গুগলই আপনাকে সঠিক ধারণা দেবে। গুগল কে এড়িয়ে যাবেন না। এটা এযুগে অনেক বড় একটা সাহায্যকারী বন্ধু ।
১১. নেগেটিভ মার্কের চিন্তা মাথা থেকে পুরোপুরি ঝেড়ে ফেলুন –
আমি প্রিলিতে একটা কৌশলে কাজ করি । সেটা আজ বললাম না । সুযোগ সময় হলে, প্রিলির কয়েকদিন আগে বলব । তবে এখন যেটা বলছি সেটা শুনুন , আজ থেকৈ বিসিএস বা বিজেএস এ নেগেটিভ মাকিং / মাইনাস মার্কিং আছে এটা ভুলে যান । আরামসে থাকেন । প্রিলির আগ পর্যন্ত এটা নিয়ে চিন্তাই করবেন না ।
মডেল টেস্ট দিবেন কিন্তু মাইনাস মার্কিং হিসেব করবেন না্।
শেষ কথা – আপনি যদি ভেবেই থাকেন , আপনার দিয়ে হবে না , তবে শুধু শুধু আমারে নক দিয়ে সময় নষ্ট করবেন না। ২ , কোচিং এবং বই এর নাম জানতে চাইবেন না।
আমার বিসিএস এবং বিজেএস দেওয়ার অভিজ্ঞতাই একবার সুতরাং আমি অনেক অনভিজ্ঞ এ ব্যাপারে । আমার সাথে অভিজ্ঞদের চিন্তাভাবনা নাও মিলতে পারে।
আমি ইংরেজি এই প্রবাদটাতে বিশ্বাস করি – “fools rush in where angels fear to tread” । এবং এটা অনুযায়ীই কাজ করা পছন্দ করি।
কোন বিষয়ে সহমত বা দ্বিমত থাকলে জানাবেন।
ধন্যবাদ ।
**************************************************
লেখক: ই্রবাহীম খলিল মুহিম
এলএলবি(সম্মান), এলএলএম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
৩৬তম বিসিএস (প্রশাসন) [সুপারিশপ্রাপ্ত]
১০ম বিজেএস (সহকারী জজ/জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) সুপারিশপ্রাপ্ত।
#আরো_পড়ুন
বিসিএস প্রিপারেশন, কি পড়বো, আর কি পড়বোনা

Tuesday, October 24, 2017

Shikari Full Bangla Movie Download

Shikari full bangla movie Download
শিকারী বাংলা মুভি ডাউনলোড

Movie Name: Shikari (শিকারী)
 Cast: Shakib khan, Srabanti
Country: Bangladesh, India

For DOWNLOAD Click Here

ফিজেট স্পিনার কি? বিজ্ঞান কি বলে?


ফিজেট স্পিনার (Fidget Spinner) কী?
ফিজেট স্পিনার হলো স্ট্রেস কমানো এবং মনঃসংযোগ বাড়ানোর জন্য একপ্রকার খেলনা। মৌলিক ফিজেট স্পিনার একটি ব্রাস, স্টেইনলেস স্টীল, টাইটানিয়াম, তামা এবং প্লাস্টিক সহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি একটি খেলনা। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা মনস্তাত্ত্বিক চাপের জন্য মুক্তির প্রক্রিয়া হিসাবে অভিনয় করার মাধ্যমে ফোকাসিং বা বিচ্ছুরিত; যেমন- এডিএইচডি, অটিজম, বা উদ্বেগযুক্ত এমন সমস্যাগুলি থেকে মুক্তি পেতে অনেকে তা ব্যবহার করে থাকেন।
১৯৯০ সালের দিকে এটি আবিষ্কার করা হয়েছিল, তবে ২০১৭ সালে ফিজেট স্পিনারটি একটি জনপ্রিয় খেলনা হয়ে ওঠে।

ফিজেট স্পিনারের ব্যবহার:
১. মনঃসংযোগ বাড়ানোর জন্য ফিজেট স্পিনার ব্যবহার করা হয়।
২. মানসিক চাপ বা অস্তিরতা দূর করার জন্য ফিজেট স্পিনার একটি স্ট্রেস বাস্টার।
৩. কাজের চাপ সামলে মনকে স্থিতধী রাখার শক্তি এর থেকে পাওয়া যায় ফিজেট স্পিনার ব্যবহার করে।
৪. আইটি সেক্টরের কর্মী যারা কাজ করতে করতে চেয়ার থেকে উঠতে সুযোগ পান না, তাদের মনঃসংযোগ ধরে রাখার ক্ষেত্রে ফিজেট স্পিনার বেশ কাজ দিচ্ছে। কারণ এই টয় খেলার জন্য হাত আর চোখের দৃষ্টি খুব বেশি প্রয়োজন।
৫. অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের মনঃসংযোগ বাড়ানোর জন্যই এই স্পিনারের ব্যবহার করা হয়।
৬. যখন কোনও মনোবিদ প্রথমবার অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেন, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, তারা সাড়া দিচ্ছে না। তাই প্রত্যাশিত সাড়া পাওয়ার জন্য এই ধরনের টয় ব্যবহার করা হয়।
৭. যে সব শিশু আচমকা রেগে যায়, তাদের রাগ নিয়ন্ত্রণের একটা উপায় হিসেবে ফিজেট টয় ব্যবহার করা হয়।
৮. যাদের সেন্সর-ওরিয়েন্টেড সমস্যা থাকে, যেমন- চোখে পাওয়ারের সমস্যা নেই, কিন্তু ফোকাসের সমস্যা আছে, তাদের একাগ্রতা বাড়ানোর জন্য ফিজেট টয় ব্যবহার করা হয়।
৯. নখ খাওয়া, পা নাচানো প্রভৃতি বদভ্যাস ছাড়ানোর জন্য ফিজেট টয়ের ব্যবহার করা যায়।
ফিজেট স্পিনার কোথায় পাবো আর দাম কত?
ফিজেট স্পিনার এখন সারা দেশেই পাওয়া যায়। খেলনার দোকানে, কসমেটিক্স এর দোকানে, ঢাকার গুলিস্তানে অনেক কম দামে ভালো পিজেট স্্পিনার পাওয়া যায়। এছাড়াও আরএফএল এর বেস্টবাই এবং শোরুমেও পাওয়া যায়।
ফিজেট স্পিনার বিভিন্ন দামের হয়। ভালো মানের গুলো ১৫০ টাকা থকে শুরু করে ১৫০০ এবং ১০০০০ পর্যন্ত দাম হয়।
সতর্কতা:
তবে অটিজম হোক বা এডিএইচডি, প্রতিটি শিশুর সমস্যা কিন্তু ভিন্ন ধরনের। তাই সমস্যা বুঝেই এই খেলনা ব্যবহারের পরামর্শ দেন মনোবিদরা।

বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা:
ফিজেট স্পিনার পদার্থ বিজ্ঞানের গতির মৌলিক সুত্রগুলো অনুসরন করে চলে। ফিজেট স্পিনারের মঝখানে যে গিয়ার থাকে তার ঘর্ষণজিত বাধা খুব কম হওয়ার কারনে ফিজেট স্পিনার দ্রুত এবং দীর্ঘক্ষণ ঘুরতে থাকে। 
এর বাহু বা প্রান্তগুলো ভারী এবং সমভরের তাই এর গতি জড়তাও বেশি হয় এবং দীর্ঘক্ষণ যাবত ফিজেট স্পিনারটি ঘুরতে থাকে।

Friday, October 13, 2017

মোস্তফা সারোয়ার ফারুকীর "ডুব" সম্পর্কে অজানা তথ্য!

ডুব সম্পর্কে অজানা তথ্য জানতে ভিডিওটি দেখুন।




ডুব হচ্ছে ২০১৭ সালের একটি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। ধারণা করা হচ্ছে এটি জীবনী সম্পর্কিত একটি নাট্য চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটি লিখেছেন ও পরিচালনা করেছেন মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী। চলচ্চিত্রটির প্রযোজনা করবেন জাজ মাল্টিমিডিয়ার আব্দুল আজিজ, এসকে মুভিজ এবং ইরপান খান। চলচ্চিত্রটির শিল্পীগন হলেন ইরফান খান, নুসরাত ইরোজ তিশা, রোকেয়া পরাচী এবং পার্ণো মিত্র। গল্পটি তৈরি হয়েছে পরিবারের প্রধান সদস্যের মৃত্যুর পরে দুইটি পরিবারের অটুট বন্ধনের কাহিনী নিয়ে। যেখানে একজন মধ্যবয়স্ক লেখক এক তরুনীর প্রেমে পড়েন যিনি তার মেয়ের বন্ধু। চলচ্চিত্রটির প্রধান ভাষ্য হচ্ছে যে,মৃত্যু সবসময় সব কিছু নিয়ে যায় না,অনেক সময় কিছু দিয়েও যায়।
আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে প্রথম জানানো হয়, ডুব ছবিতে ইরফান খান অভিনয় করছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের চরিত্রে। অনুরূপে রোকেয়া প্রাচী হুমায়ূন আহমেদের প্রথম স্ত্রী গুলতেকিন, কন্যা শীলার চরিত্রে তিশা এবং মেহের আফরোজ শাওনের চরিত্রে পার্ণো মিত্র অভিনয় করবেন বলে জানা যায়। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের পরিবারের কেউই এ সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে সেখানে প্রকাশিত হয়। হুমায়ূন আহমেদের জীবনিভিত্তিক চলচ্চিত্র হলে তার পরিবারের কেউ কেন জানবে না এই নিয়েই পরিবারের সদস্যরা, বিশেষ করে শাওন আপত্তি জানায়। এর পরপরই চলচ্চিত্রটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। কিন্তু পরিচালক জানান যে তারা কোনো জীবনীনির্ভর চলচ্চিত্র বানাচ্ছেন না।
পরবর্তীতে চলচ্চিত্রটি ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ তারিখে যৌথ প্রযোজনার প্রিভিউ কমিটি সেন্সর বোর্ড থেকে অনাপত্তিপত্র (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) পাওয়া সত্ত্বেও ১৬ ফেব্রুয়ারি তথ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশক্রমে সেই অনাপত্তিপত্র স্থগিত করা হয়। ১৩ই ফেব্রুয়ারি শাওন সেন্সর বোর্ড বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়ে হুমায়ূন আহমেদের ভুল জীবনিনির্ভর চলচ্চিত্র নির্মাণের আশঙ্কা প্রকাশ করার পরপরই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফারুকী জানায় এ স্থগিতাদেশের কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা নেই। ডুব মৌলিক গল্পের উপর ভিত্তি করে নির্মিত বলেও তিনি জানান।